মানসিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি : রোগ থেকে মুক্তির উপায়

মানসিক রোগের চিকিৎসা

মানসিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি : রোগ থেকে মুক্তির উপায়

আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করবো, মানসিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি এবং এই রোগ থেকে মুক্তির উপায়। কিভাবে একজন মানসিক রোগী সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে পারবে তার বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

মানসিক রোগের চিকিৎসা

শারীরিক এবং মানসিকভাবে একজন সুস্থ ব্যক্তি স্বাভাবিক ও সমাজ অনুমনিত আচরণ করবে এরূপ প্রত্যাশা আমরা সহজেই করতে পারি। অন্যদিকে একজন অসুস্থ ব্যক্তির সব সময় স্বাভাবিক আচরণ প্রদর্শন করবে এরূপ আশা করা যায় না। অর্থাৎ অসুস্থ ব্যক্তি যদি মাঝে মাঝে স্বাভাবিক আচরণ করতে পারে। আবার বলা যায় যে, একজন দৈহিকভাবে সুস্থ ব্যক্তি মানসিক অসুস্থ হতে পারে। এজন্য প্রয়োজন অস্বভাবী আচরণের কারণ নির্ণয় এবং মানসিক রোগীর চিকিৎসা করা। অস্বভাবী ব্যক্তিদের চিকিৎসার সত্তিকারের উন্নয়ন ঘটে ১৮ শতকের শেষের দিকে। উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ফ্রান্সের চিকিৎসক ফিলিপ পিনেল ১৯৭২ সালের দিকে প্যারিসের একটি রয়েল হাসপাতালে যখন সুপারিয়েন্টডেন্ট হিসেবে নিযুক্ত হন তখন হতেই আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির সঠিক ধারা উন্মোচিত হয়।

ফিলিপ পিনেল বিশ্বাস করতেন যে, অস্বভাবী ব্যক্তিরা অন্যান্য শান্তি যোগ্য অপরাধী থেকে আলাদা। অস্বভাবী ব্যক্তিরা খুব অসহায় এবং তারা মানসিক সেবা পাবার যোগ্য। ফিলিপ পিনেল নৈতিক চিকিৎসার কথা বলেছেন। তিনি বলেন চিকিৎসক রোগীর প্রতি খুব যত্নবান হবেন এবং রোগীর সমস্যা গুলি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। তার এই নৈতিক চিকিৎসা অস্বভাবী আচরণ দূর করার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী সাফল্য লাভ করে এবং পরবর্তীকালে এর সুফল আমেরিকায় ও ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। মানসিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি নৈতিক চিকিৎসাই মানসিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সাহায্য করে।

 

মানসিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি এবং মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায়

মানসিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি এবং মানসিক রোগ থেকে মুক্তি পেতে আপনাকে নিম্নলিখিত কিছু উপায় পালন করা দরকার হতে পারে। মানসিক সমস্যার জন্য প্রয়োজনীয় হতে পারে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা, যেমন মনোযোগকেন্দ্রিক থেরাপি (Cognitive Behavioral Therapy), মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের (Psychiatrist) পরামর্শ ও চিকিৎসা। নিম্নলিখিত কিছু আদর্শ উপায় মানসিক রোগ থেকে মুক্তির জন্য মানসিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি আলোচনা করা হলো :

  1. মনোচিকিৎসা – Psychotherapy
  2. মক্কেলকেন্দ্রিক চিকিৎসা বা ক্লাইন্ট কেন্দ্রিক চিকিৎসা – Client Centred Therapy
  3. আচরণ চিকিৎসা – Behaviour Therapy
  4. ডাক্তারী চিকিৎসা – Medical Therapy

 

মনোচিকিৎসা – Psychotherapy

মনোচিকিৎসায় একটি দীর্ঘমেয়াদি মানসিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি। মনচিকিৎসায় চিকিৎসক ও রোগীর মধ্যে গভীর সম্পর্ক ও স্থাপিত হয়। চিকিৎসক রোগীর অস্বভাবীতার গভীরে প্রবেশ করে রোগীর অবদমিত প্রেষ, দ্বন্দ্ব , বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা প্রভৃতি উদঘাটন করেন। এ পদ্ধতিতে একজন চিকিৎসক কয়েকটি উদ্দেশ্য বা লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করেন। যথা :

  • মানসিক রোগীর সমস্যা চিহ্নিতকরণ এবং সমস্যা সমাধানের জন্য রোগীর মধ্যে আন্তদৃষ্টি সৃষ্টি করা।
  • রোগীর অহম সত্তার সম্পূর্ণ পরিচয় তার কাছে তুলে ধরা।
  • মানসিক রোগের রোগীর জন্য গুরুতর ও জটিল অন্তর্দ্বন্দ্বের অবসর করা।
  • অবঞ্চিত অভ্যাস দূর করে রোগীর মধ্যে সমাজ অনুমোদিত আচরণ সৃষ্টি করা।
  • মানসিক রোগীর দক্ষতার মান বৃদ্ধি করা।
  • ত্রুটিপূর্ণ ধরনের পরিবর্তন করা।
  • রোগীকে তার সমর্থক ও সম্পূর্ণ ব্যক্তিসত্ত্বাতে পৌঁছানোর পথ নির্দেশ করা।

 

মানসিক রোগীর চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে মনোচিকিৎসা উল্লেখযোগ্য কৌশল রয়েছে যার মাধ্যমে মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায় খুব সহজেই বের করা যায়। যেমন : মনঃসমীক্ষণ পদ্ধতি, দলগতপারিবারিক চিকিৎসা, সাইকোড্রামা ইত্যাদি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় হলো। রোগীকে উৎসাহিত করা, শান্ত ও নিরিবিলি পরিবেশের রোগে যাতে তার অসুবিধার কথা বলতে পারে ইত্যাদি। দলগত চিকিৎসা পদ্ধতি দলের সদস্যের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ইতিবাচক মনোভাব, আত্মসচেতনতা, স্বয়ংসম্পূর্ণতা প্রভৃতি গুণাবলী বিকশিত হয় এবং পারিবারিক চিকিৎসা পদ্ধতি থেকে রোগীদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যের মধ্যে রেখে চিকিৎসা কার্য সম্পন্ন করা হয়। চিকিৎসায় পরিবারের সদস্যরা একসাথে আলাপ-আলোচনা করে তাদের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করেন।

আবার সাইকোড্রামা পদ্ধতি অনুযায়ী রোগীর সাথে চিকিৎসক নিজে নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন। আবার একদল রোগী নাটকের দর্শকের ভূমিকা থাকে। সাইকোড্রামা এর মুল উদ্দেশ্য হল জীবন ও জগৎ সম্পর্কে রোগীকে সচেতন করে তোলা।

 

মক্কেলকেন্দ্রিক চিকিৎসা বা ক্লাইন্ট কেন্দ্রিক চিকিৎসা – Client Centred Therapy

মক্কেল কেন্দ্রিক চিকিৎসা বা ক্লায়িন্ট কেন্দ্রিক চিকিৎসা তাহলে মক্কেল কেন্দ্রিক চিকিৎসা পদ্ধতি মনঃসমীক্ষণ ও আচরণ চিকিৎসার বিকল্প ব্যবস্থা মাত্র। এর চিকিৎসা পদ্ধতিতে মানসিক রোগীকে সরাসরি উপদেশ দেয়া থেকে বিরত থাকেন। এ চিকিৎসা পদ্ধতি চিকিৎসক নিষ্ক্রিয় থাকেন এবং অনেক ক্ষেত্রে নির্বাক শ্রোতার ভূমিকা পালন করেন। এর চিকিৎসা পদ্ধতিতে প্লান্টার নিজস্ব ব্যক্তিত্ব গঠনে সমর্থ্য হয় এবং ধীরে ধীরে একজন স্বাভাবিক ব্যক্তির ন্যায় নিজেকে তৈরি করতে সক্ষম হয়। ক্লায়েন্টের আচরণের মধ্যে পরিবর্তন আনায়নের উদ্দেশ্য চিকিৎসক ৩টি দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন।

অসাপেক্ষ ইতিবাচক ধারণা : চিকিৎসক ক্লায়েন্টের সাথে একটি আন্তরিক সৌন্দর্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করবেন। এমনভাবে যোগাযোগের স্থাপন করতে হবে যাতে চিকিৎসার ব্যাপারে ক্লায়েন্টের আগ্রহ দেখা দেয়। অসাপেক্ষ অর্থ এ নয় যে, একজন মানসিক রোগী যা বলবে বা যা করবে চিকিৎসক তা সমর্থন করবেন। চিকিৎসক মানসিক রোগের এমন ধারণা দিবেন যাতে তাদের মধ্যকার সম্পর্কের ব্যাপারটি শর্ত যুক্ত মনে না হয়।

সমানুভূতি : সমানুভূতি এমন একটি প্রক্রিয়া যে প্রক্রিয়ায় অন্যান্য ব্যক্তি যেভাবে জগত ও পরিবেশ সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা লাভ করে ঠিক একই ভাবে চিকিৎসক ও অভিজ্ঞতা লাভ করবেন। ক্লায়েন্টের অনুভূতির ন্যায় চিকিৎসকেরও অভিন্ন অনুভূতি থাকবে। চিকিৎসক প্রতিবিম্ব কৌশলের সাহায্যে সমানুভূতি বিনিময় করবেন। প্রতিবিম্ব কৌশল এর মাধ্যমে চিকিৎসক ক্লায়েন্ট এর বক্তব্য ও অনুভূতিকে সংক্ষিপ্ত আকারে মানসিক রোগের রোগীর কাছে উপস্থাপন করবেন।

যথাযথতা : যথাযথতা দ্বারা চিকিৎসক ক্লানটের সাথে একটি অকৃতিম সম্পর্ক স্থাপন করবেন। চিকিৎসক ক্লান্ডের গুরুত্ব দেবেন এবং সবসময় সহানুভূতি প্রকাশ করবেন। অসাপেক্ষ ইতিবাচক ধারণা, সমানুভূতি, ও যথাযথতা এই তিনটি শত চিকিৎসকের মনোভাব ক্লায়েন্টের মানসিক বিকাশে সাহায্য করবে। একজন মানসিক রোগী বা ক্লাইন্ট বুঝতে পারবে যে চিকিৎসক তার বক্তব্যকে মূল্য দেয় এবং তার চিন্তা ভাবনাকে সমর্থন করে।

 

আচরণ চিকিৎসা – Behaviour Therapy

সাপেক্ষ ওকরণশিক্ষণের মূলনীতি থেকে আমরা আচরণ চিকিৎসার ধারণা লাভ করে থাকি। কিন্তু বর্তমানে সমাজ মনোবিজ্ঞান এর বিষয়বস্তু হতে আচরণ চিকিৎসা সম্বন্ধে একটি ধারণা অর্জন করা সম্ভব। সাপেক্ষ নীতির ভিত্তিতে আচরণের মধ্যে পরিবর্তন আনায়ন করা যায়। আচরণ চিকিৎসা পদ্ধতিতে শিখনের মূল নীতির ভিত্তিতে অস্বভাবী আচরণকে স্বভাবই আচরণে পরিণত করা হয়ে থাকে।

মানসিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি এর মধ্যে আচরণ চিকিৎসার কৌশল রয়েছে তার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো :

পর্যায়ক্রমিক সংবেদনশীল হ্রাসকরণ : এ কৌশলটি ফোবিয়া এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য খুব উপযোগী। পর্যায়ক্রমিক সংবেদনশীল হ্রাসকরণ সাধারণত তিনটে যাবে সম্পন্ন হয়।

  • প্রথম ধাপ : শারীরিক শিথিলতার প্রশিক্ষণ প্রদান। রোগীর উত্তেজনা, বয় বেটি দূর করার লক্ষ্যে চিকিৎসক রোগীকে নির্দেশ দিবেন কিভাবে তার হাত, পা, নাক ও মাথার শিথিলতা করতে হবে।
  • দ্বিতীয় ধাপ : রোগীর দুশ্চিন্তা শ্রেণীকরণ। দুশ্চিন্তা উদ্বের্ককারী উদ্দীপকসময়ের একটি তালিকা প্রণয়ন করতে হবে। অপেক্ষাকৃত কম ভীতিশ সৃষ্টিকারী উদ্দীপকটির তালিকা প্রথমে থাকবে এবং বেশি উদ্বের্ককারী উদ্দীপকটি তালিকা সর্বশেষ থাকবে।
  • তৃতীয় ধাপ : দুশ্চিন্তা হ্রাসকরণ প্রক্রিয়া। রোগীর চোখ বন্ধ করে আরামের সাথে একটি চেয়ারে বসবে। চিকিৎসক দুশ্চিন্তা উদ্বের্ককারী বিভিন্ন চিত্রের মধ্যে থেকে অপেক্ষাকৃত কম দুশ্চিন্তা সৃষ্টিকারী চিত্রটি প্রথম উপস্থাপন করবেন। প্রত্যেকটি চিত্র উপস্থাপনের সময় সংশ্লিষ্ট চিত্রের আশে পাশের অবস্থা, শব্দ, দৃশ্য ইত্যাদির বর্ণনা রোগীকে দিতে হবে এবং চিকিৎসক রোগীকে এ কাজে সাহায্য করবেন। রোগী যতক্ষণ পর্যন্ত দুশ্চিন্তা হতে মুক্তি না পাবে ততক্ষণ পর্যন্ত ওই নির্দিষ্ট দৃশ্যের পুনাবৃত্তি চলবে। তারপর পরবর্তী দৃশ্যের উপস্থাপন করা হবে। সাধারণত দুশ্চিন্তা হ্রাসকরণ প্রক্রিয়া প্রতি সেশন ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

জৈব ফিরতিবার্তা চিকিৎসা : জৈব ফিরতিবার্তা চিকিৎসা এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে এমন শিক্ষা দেয়া হয় যাতে মানসিক রোগী তার মাংসপেশীর উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে পারে এবং মানসিক চাপ ও দৈহিক উত্তেজনা কমাতে পারে।

প্রতিষ্ঠা মূলক আচরণের প্রশিক্ষণ প্রদান : প্রতিষ্ঠামূলক আচরণ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ব্যক্তির অনুমতির প্রকাশ ঘটানো হয়। রোগীকে সরাসরি এবং বিনম্রভাবে কোন একটি আচরণ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তবে এরূপ প্রশিক্ষণ কাজ মানহানিকর নয় এবং অন্যান্য মান সম্মান ও খর্ব করে না।

মডেলিং : মডেলিং এর অর্থ হল অন্যান্য আচরণ অনুকরণ করার জন্য দক্ষতা অর্জন করা। আমাদের অধিকাংশ আচরণী পর্যবেক্ষণ মূলক শিখন দ্বারা সংঘটিত হয়। এর অর্থ হলো আমরা অন্যের আচরণ পর্যবেক্ষণ করি এবং ব্যক্তির কোন আচরণটি অনুকরণ করতে হবে সেই ব্যাপারেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। যেমন একজন পিতার কাছ থেকে সন্তান কথা বলার স্টাইল, ব্যক্তিগত অভ্যাস অনুকরণ করে অন্যের কাছে তা প্রতিক্রিয়া করে থাকে।

 

ডাক্তারী চিকিৎসা – Medical Therapy

মানসিক বেডি গ্রস্ত ব্যক্তিদের মানসিক ও শারীরিক অসুবিধা সমূহ দূরীকরণের ক্ষেত্রে মেডিকেল চিকিৎসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মানসিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি এবং মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায় এরমধ্যে অন্যতম হলো ডাক্তারি বা মেডিকেল চিকিৎসা।

  • ভেষজ চিকিৎসা : ফার্মাকোলজি হলো ঔষধ সম্বন্ধীয় বিজ্ঞান যা ঔষধের ব্যবহার, প্রস্তুত প্রণালী এবং এর কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা করে। অম্বিকা সাইকোফার্মাকলজি বিশেষভাবে ওই সব ঔষধ নিয়ে আলোচনা করে যা প্রত্যক্ষভাবে মানসিক কার্যাবলী ও আচরণের উপর প্রভাব বিস্তার করে। এরূপ ঔষধকে মানসিকক্রিয়ক ঔষধ বলা হয়।
  • ইনস্যুলিন চিকিৎসা : পোল্যান্ডের মনোবিজ্ঞান ম্যানগ্রোভ সাকেল ইনস্যুলিনের সাহায্যে মানসিক রোগীদের চিকিৎসা করেছিলেন। এর চিকিৎসা প্রণালী সময় সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল ও বিপদজনক। এর চিকিৎসা ব্যবস্থার ইনজেকশনের মাধ্যমে রোগীর রক্তের ভেতরে বেশি পরিমাণ ইনস্যুলিনের অনুপ্রবেশ করানো হয়। ফলে এক ঘন্টা সময়ের মধ্যে রোগীর দেহে শর্করা পরিমাণ হ্রাস পায়, রোগী দুর্বল হয়ে পড়ে। তারপর গ্লুকোজ ইনজেকশন দিয়ে রোগীকে স্বাভাবিক পর্যায়ে আনা হয়। মানসিক রোগীদের বেলায় ইনস্যুলিন খুবই কার্যকরী পদ্ধতি।
  • বৈদ্যুতিক ধাক্কা চিকিৎসা : ডাক্তারি বা মেডিকেল চিকিৎসা সময়ের মধ্যে সবচেয়ে কৌতুহলী ও বিতর্কিত চিকিৎসা হলো বৈদ্যুতিক চিকিৎসা। এর চিকিৎসা ব্যবস্থা মূলত ; স্কিজোফ্রেনিয়া রোগীদের জন্য চালু করা হয়েছিল। কিন্তু এ ব্যবস্থা মারাত্মক বিষন্ন গ্রস্ত ব্যক্তিদের বেলায় খুবই কার্যকর। বিশেষ করে মৃগ রোগীর চিকিৎসা এর কার্যকারিতা বেশি। মানসিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি একটি পদ্ধতি হলো বৈদ্যুতিক চিকিৎসা। এর মাধ্যমে মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায় পাওয়া যায়।

রোগীকে প্রথমে শুধিয়ে দিতে হয় তারপর ইনজেকশন দ্বারা অবশ করা হয়। ফলে রোগী দ্রুত অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তারপর রোগীর মাথার খুলির কাছে সাধারণত মস্তিষ্কের নিম্নভাগের ৭০ থেকে ১৭০ ভোল্টের বিদ্যুৎ আঘাত প্রায় অর্ধ সেকেন্ড পর্যন্ত দেয়া হয়। এর ৩০ সেকেন্ড সময় পর্যন্ত রোগী বিভিন্ন পেশীতে আকাস্মিত ও প্রচন্ড খিচুনি শুরু হয়। এ সময় রোগীর হাত পা প্রচন্ডভাবে ছুড়তে থাকেন। ১৫ থেকে ৬০ মিনিট সময়ের পরে মানসিক রোগী স্বাভাবিকভাবে কাজকর্ম শুরু করতে পারে। ২ থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে ৬ থেকে ১০ বার বৈদ্যুতিক চিকিৎসা প্রয়োগের মাধ্যমে বিষন্ন গ্রস্থ রোগীদের দিলে তাদের অস্বাভাবিক আচরণের উন্নতি দেখা যাবে বলে আশা করা যায়।

 

এছাড়াও বর্তমানে বাংলাদেশে বিভিন্ন ( Treatment of mental illness) মানসিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতাল এবং কিছু স্বাস্থ্য টিপস অথবা অন্যান্য মাধ্যমের দ্বারা মানসিক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। মানুষ সামাজিক জীব তাই সমাজে বসবাস করার সকল মানুষই স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে চায়। তেমনি মানসিক রোগীদের ক্ষেত্রেও সবাই চায় মানসিক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া।

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন :
https://facebook.com/rvwbd/

 

Sohel Mahmud
About Sohel Mahmud 10 Articles
Owner & Administrator Of RVWBD.COM

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*