বাংলাদেশের শিক্ষা পদ্ধতি এবং কাঠামো সম্পর্কে আলোচনা কর।
শিক্ষাকে বলা হয় জাতির মেরুদন্ড। একটি জাতির উন্নতি, অবনতি নির্ভর করে শিক্ষার উপর। তাই বাংলাদেশের শিক্ষা পদ্ধতি এবং কাঠামো এর বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা পদ্ধতির পরিচালনা করা হয়েছে। জাতি দেশের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা গ্রহণ করে। শিক্ষাকে সর্বজনগ্রাহ্য ও উপযোগী করার জন্য শিক্ষা পদ্ধতি ও কাঠামো বহুমুখী করা হয়েছে। মানুষকে তার ব্যক্তিগণের যে ধর্মটি বিশেষভাবে কাজ করে তাহলে শিক্ষা। মানুষের সামাজিকীকরণে শিক্ষা এমন একটি মৌলিক পরীক্ষার জাম মানব আচরণ ও তার ব্যক্তিত্ব পরিবেশের সাথে সঙ্গতি বিধানে সর্বদা সহায়তা দান করে।
বাংলাদেশের শিক্ষা পদ্ধতি এবং কাঠামো সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই বলা যায় শিক্ষা সমাজের মৌলিক কার্যকালের মধ্যে অন্যতম। এই শিক্ষা সুস্থ ও সামাজিকীকরণের চালিকাশক্তি। মানুষ শিক্ষার সংস্পর্শে এসে ব্যক্তিত্বেে।র বিকাশ ঘটায়। একইভাবে শিক্ষা মানুষকে ব্যক্তির সার্বিক উন্নয়ন ঘটায় আবার শিক্ষা মানুষকে কর্মজীবনের জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলে। তাই বাংলাদেশ শিক্ষা পদ্ধতি এবং কাঠামো সম্পর্কে জানা এবং সার্বিক উন্নয়নের প্রশ্নের বর্তমানে কর্মক্ষেত্রের শিক্ষাকে গুরুত্বপূর্ণ দান করা হয়েছে। এর জন্য আমাদের বাংলাদেশের শিক্ষা পদ্ধতি এবং কাঠামো সম্পর্কে বিস্তারিত জানা অবশ্যই দরকার কারণ শিক্ষা এর গুরুত্ব অপরিসীম। নিচে বাংলাদেশের শিক্ষা পদ্ধতি এবং কাঠামো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
☞ আরও পড়ুন : সমাজ মনোবিজ্ঞান কি? সমাজ মনোবিজ্ঞান পাঠের গুরুত্ব ও পদ্ধতি সমূহ
বাংলাদেশের শিক্ষা পদ্ধতি এবং কাঠামো আলোচনা কর
বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা পদ্ধতি রয়েছে। বাংলাদেশের শিক্ষা পদ্ধতিকে চারটি প্রধান স্তরে ভাগ করা হয়েছে। এই স্তর গুলো হলো :
- সাধারণ শিক্ষা
- মাদ্রাসা শিক্ষা
- টেকনিক্যাল শিক্ষা
- টিচার’স এডুকেশন বা শিক্ষকদের শিক্ষা
নিচে স্তরগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
সাধারণ শিক্ষা
বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার তিনটি পর্যায় রয়েছে, পর্যায় তিনটি হলো :
- প্রাথমিক পর্যায় : প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক পর্যায়। ৬ থেকে ১০ বছরে শিশুরা এ পর্যায়ে শিক্ষা গ্রহণ করে।
- দ্বিতীয় পর্যায়ে : দ্বিতীয় পর্যায়ে আবার কতগুলো পর্যায়ের সমন্বয়ে গঠিত। এ পর্যায়ে সাত বছর সময় লাগে।
১. নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষা : ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত এ পর্যায়ে। এ পর্যায়ে তিন বছর সময় লাগে ।
২. মাধ্যমিক শিক্ষা : নবম ও দশম শ্রেণী পর্যন্ত এ পর্যায়ে। মাধ্যমিক শিক্ষা শেষে শিক্ষার্থীকে পাবলিক পরীক্ষা অংশগ্রহণ করতে হয়। উত্তিন ওদের এসএসসি বা সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
৩. উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা : একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি পর্যায়ে ভুক্ত। দুই বছরের পড়াশোনা শেষে শিক্ষার্থীরা পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। উত্তিন ওদের এইচএসসি বা হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
- তৃতীয় পর্যায় : তৃতীয় পর্যায়ে স্নাতক ও স্নাতক উত্তর দিক দিয়ে সম্পাদন করা হয়। তিন বছরের ডিগ্রী পাস কোর্স ও চার বছরের অনার্স কোর্সের মধ্যে শিক্ষার্থী যে কোন একটি বেছে নেয়। একজন স্নাতক শিক্ষার্থী এক বছর মেয়াদে স্নাতক সম্পাদন করে।
মাদ্রাসা শিক্ষা
বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। মাদ্রাসা শিক্ষার পাঁচটি পর্যায়ে রয়েছে।
- এফতেদায়ি : প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এফতেদায়ি শিক্ষা। এ পর্যায়ে শিশুর পাঁচ বছর সময় লাগে।
- দাখিল : দাখিল স্তরে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত। এ স্তর সম্পন্ন করতে শিক্ষার্থীদের পাঁচ বছর সময় ব্যয় করতে হয়।
- আলিম : একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার পর্যায়ভুক্ত। এ পর্যায়ে দুই বছর সময় লাগে।
- ফাজিল : সাধারণত শিক্ষার স্নাতক পর্যায়ে ন্যায়। এখানে শিক্ষার্থীকে দুই বছর সময় ব্যয় করতে হয়।
- কামিল : এটি সাধারণত শিক্ষার স্নাতকোত্তর পর্যায়ের। এ পর্যায়ে শিক্ষার্থীকে এক বছর সময় ব্যয় করতে হয়।
টেকনিক্যাল শিক্ষা
নবম ও দশম শ্রেণী থেকে বাংলাদেশের টেকনিক্যাল শিক্ষা প্রদান করা হয়। একজন শিক্ষার্থী নিম্ন মাধ্যমিক সম্পন্ন করে এ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। দুই বছরের এসএসসি (ভোকেশনাল ) সম্পূর্ণ করার পর শিক্ষার্থী দুই বছরের এইচএসসি (ভোকেশনাল) কোর্স সম্পূর্ণ করতে পারে। এসএসসি (ভোকেশনাল) কোর্সের পর পরীক্ষার্থীরা তিন বছরের ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স করতে পারে। এসএসসি পাস করার পর স্নাতক পর্যায় কৃষি, মেডিকেল বা ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হতে পারে।
টিচার’স এডুকেশন বা শিক্ষকদের শিক্ষা
বাংলাদেশের শিক্ষকদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রাইমারি শিক্ষকরা পিটিআই ( প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট) এ এক বছর মেয়াদী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ লাভ করে। কলেজের শিক্ষকরা টিটিসি ( টিচার’স ট্রেনিং কলেজ) এ এক বছর মেয়াদী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ লাভ করে। হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষকরা এইচএসটিআই ( হায়ার সেকেন্ডারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ) এ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ লাভ করে। ভোকেশনাল কোর্সের শিক্ষকরা ভিটিআই ( ভোকেশনাল টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট) এ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ লাভ করে। এছাড়াও বাংলাদেশের ব্যাচেলার ইন এডুকেশন ( বি এড) এবং মাস্টার্স ইন এডুকেশন ( এম এড) শিক্ষা শিক্ষকদের জন্য প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে।
উপর্যুক্ত আলোচনার শেষে বলা যায় যে, ব্যক্তি ও সমাজের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে শিক্ষা পদ্ধতি ও কাঠামো সাজানো হয়েছে। বাংলাদেশের শিক্ষা পদ্ধতিতে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের শিক্ষার সমন্বয় সাধন করা হয়েছে। মূলত শিক্ষার কাঠামো যুগোপযোগী করার উপর জাতীয় উন্নয়ন নির্ভর করে।
☞ আরও পড়ুন : মনোবিজ্ঞান কি? মনোবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু ও পরিধি বা পরিসর আলোচনা কর।
Frequently Ask Question
বর্তমানে বাংলাদেশে শিক্ষার স্তর কয়টি ও কি কি?
উত্তর : বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষার স্তর হল ৪ টি, যথা: সাধারণ শিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষা, টেকনিক্যাল শিক্ষা, টিচার’স এডুকেশন বা শিক্ষকদের শিক্ষা।
শেষ কথা : মানব সমাজের একটি মৌলিক কার্যপ্রক্রিয়া হলো শিক্ষা। বাংলা শিক্ষা শব্দটির সাংস্কৃতির “শাস” ধাতু থেকে এসেছে। যার অর্থ শাসন করা, নিয়ন্ত্রণ করা, নির্দেশনা দেওয়া প্রকৃতি। শব্দ গত অর্থ শিক্ষা বলতে মানুষের জ্ঞান বুদ্ধির বিকাশ ঘটনাকে বোঝায়। কিন্তু উৎপত্তিগতভাবে বলতে গেলে শিক্ষা বলতে বুঝায় নিয়ন্ত্রণ, নির্দেশনা ও শাসনের মাধ্যমে কোন কিছু অর্জন করা। অন্যভাবে বলা যায় শিক্ষা বলতে কেবলমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোন বিষয় শিক্ষিত করা কেউ বুঝায় না, শিক্ষা বলতে আসলে শিক্ষার দৃষ্টিভঙ্গি ও আচার-আচরণ কে পরিশীলতা করাকেই বোঝায়, যার মাধ্যমে সে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ সমর্থক ভাবে মোকাবেলা করতে পারে। আপনি বাংলাদেশের শিক্ষা পদ্ধতি এবং শিক্ষা কাঠামো খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
এসএসসি, এসএসসি, ডিগ্রী, অনার্স সাজেশন পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। আমরা নিত্যনতুন পরীক্ষা অনুযায়ী প্রতিবছর ১০০% কমনো উপযোগী সাজেশন দিয়ে থাকে। ২০২৪ সালে যারা পরীক্ষার্থী আছেন। তাদের জন্য আমাদের এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ের সাজেশন প্রদান করা হবে।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন :
https://facebook.com/rvwbd/
“Great job!”
Thank You, Stay With us 🌺